সংবাদচর্চা অনলাইনঃ
নারায়ণগঞ্জের প্রসিদ্ধ খাবারের ব্র্যান্ড খুব কমই আছে। ঢাকার মত তেমন প্রতিযোগিতা করতে হয়না তাদের। ঘুরে ফিরে সুগন্ধা, সুমাইয়া, প্যারিস বাগেতের কাছেই খাবারের জন্য ছুটে যান খাদ্য রসিক নগরবাসী। কিন্তু একচ্ছত্র ব্যবসার সুযোগ নিয়ে নিন্মামানের খাবার সরবরাহ আর ভেজাল খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এনিয়ে একাধিকবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও পরিবর্তন আনেনি মালিকরা।
গত কয়েকবছরে বেশ কিছু প্রতিবেদন অনুসন্ধান করে বেরিয়ে আসে নগরীর সুগন্ধা প্রতিষ্ঠানের দুর্গন্ধ ছড়ানো কর্মকান্ড। বার বার ভ্রাম্যমান আদালত তাদের জরিমানা করলেও তাতে নিজেদের পরিবর্তন করেনি তারা।
কয়েক বছর পূর্বে সাধু পৌলের গীর্জার পাশে অবস্থিত খাবারের রেস্টুরেন্ট সুগন্ধা প্লাস একটি পণ্যে ৪টাকা বেশী আদায় করায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। ভোক্তা অধিদপ্তরে মামলা দায়ের করায় মামলায় আদালত ওই অর্থদন্ড করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই রেস্টুরেন্ট একটি স্প্রাইট ২০০ মিলি কোমলপানীয় ক্রয় করেন যা বাইরে ১৬ টাকা করে বিক্রি হয়। সুগন্ধা প্লাসে প্রতিটি স্প্রাইট ২০টাকা করে রাখা হয় এবং এর কারণ জানতে চাইলে রাসেলের সাথে দুর্ব্যবহার করেন সেখানের বয়রা। তাকে জোর করে ২০ টাকাই দিতে বাধ্য করা হয়।
প্রতারিত হওয়া রাসেল জানান, আমি স্বাভাবিকভাবে ১৬টাকার জিনিস ২০টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অতিরিক্ত দামের কারণ জানতে চাওয়ায় তারা আমার সাথে খারাপ আচরণ করে জোর করে টাকা দিতে বাধ্য করে। আমি ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা করেছি। খাবারের বিলের কপিও সাথে সংযুক্ত করেছি।
তিনি জানান, শুধু কোমলপানীয়ই নয় সকল কিছুরই অতিরিক্ত দাম রাখে সুগন্ধা প্লাস। এখানে খাবারের দাম অন্যান্য যেকোন রেস্টুরেন্টের চেয়ে বেশী। একই সাথে খাবারের মানও তেমন উচ্চ মানের নয়।
৫ মার্চ সুগন্ধা প্লাস হোটেলে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার না করে গাড়িতে ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ সিএনজি গ্যাসের সিলিন্ডার রান্নার কাজে ব্যবহার করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর চাষাঢ়াস্থ খাজা সুপার মার্কেটের পাশে নতুন উদ্বোধন করা সুগন্ধা প্লাস রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে যায় পার্থ প্রতিম কর্মকার নামে এক ব্যক্তি। অন্যান্য খাবারের সাথে তিনি চিকেন মোগল চাপ অর্ডার করেছিলেন। খাওয়ার এক পর্যায়ে খেয়াল করে দেখেন চিকেন মোগল চাপের মধ্যে আস্ত একটি তেলাপোকা। খাবারের মূল্য বেশি হয়েও নিমানের খাবার সরবরাহ করায় এর প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেন। যা মুহূর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পরে।
ফেসবুক পোস্টিটিতে পার্থ প্রতিম কর্মকার লিখেন, মেয়ে বায়না ধরায় আজকে রাতে ওদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া নতুন সুগন্ধা প্লাস রেস্টুরেন্টে খেতে নিয়ে এসেছিলাম। মেয়ের খাবারেই একেবারে রান্না করা তেলাপোকা পেলাম। ভাগ্যটা এতটাই খারাপ পরলো তো একেবারে মেয়ের চিকেন মোগল চাপে। বাসায় এসেতো বমি শুরু করে দিয়েছে।
সবশেষ ভেজাল কেমিক্যাল দিয়ে খাদ্য উৎপাদন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরী ও মেয়াদউত্তির্ণ খাবার বিক্রি করার দায়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এমন অসংখ্য অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু এখন সুগন্ধা। খুব দ্রুতই তাদের এমন অপকর্ম থেকে বেরিয়ে না আসলে সুগন্ধাকে বয়কট করা নারায়ণগঞ্জ বাসীর কাছে সময়ের ব্যাপার মাত্র।